প্রত্যয় ডেস্ক: প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের পুনরুত্থানের লাগাম টানতে কারফিউ জারি করায় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস-সহ দেশটির অন্য ৮টি শহরের রাস্তা যেন জনমানবশূন্য মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। শনিবার রাত থেকে এই কারফিউ বলবৎ হওয়ায় ভূতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়েছে ফ্রান্সের ৯টি শহর। ফ্রান্সে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্বিতীয় দফায় বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটির সরকার বিতর্কিত রাত্রিকালীন কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে করোনার অন্যতম হটস্পট হয়ে উঠছে ফ্রান্স।
বসন্তে দুই মাসের লকডাউনে ব্যবসা-বাণিজ্য ধুঁকছে বলে দেশটির রেস্টুরেন্ট মালিকরা অভিযোগ করেছেন। এদিকে, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কা মোকাবিলায় ইউরোপের আরেক দেশ ইতালি নতুন করে বিধি-নিষেধ আরোপ করছে। করোনার প্রথম ঢেউয়ে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইতালিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শনিবার দেশটিতে দৈনিক রেকর্ডসংখ্যক করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস, মার্সেলে, লিয়ন, লিলি এবং তুলোসসহ অন্যান্য শহরের প্রায় ২ কোটি মানুষ কারফিউয়ের আওতায় এসেছেন। প্রত্যেকদিন রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত এই কারফিউ বলবৎ থাকবে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ তৈরির ঝুঁকি এড়াতে কারফিউয়ের প্রয়োজন। কিন্তু দেশটিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। প্যারিসে ইতালীয় রেস্টুরেন্ট বায়ানকোর ব্যবস্থাপক স্টেফানো আনসেলমো ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, রেস্টুরেন্টের কর্মচারীরা নিশ্চিতভাবেই চাকরি হারাবেন। এটা এক ধরনের দুর্যোগ।
ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, শনিবার দেশটিতে রেকর্ড ৩২ হাজার ৪২৭ জন নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। আগের দিন ২৫ হাজার ৮৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে উৎপত্তি হওয়া করোনাভাইরাসে ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি মানুষ এবং মারা গেছেন ৩৩ হাজারের বেশি। দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটির চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক চাপ তৈরির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্যারিস ও অন্যান্য শহরের হাসপাতালগুলোর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রগুলোতে (আইসিইউ) করোনা রোগীর সংখ্যা গত কয়েকদিন ধরে তুলনামূলক বাড়ছে।